বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক) ও সহপ্রধান (সহকারী প্রধান শিক্ষক) নিয়োগের দায়িত্ব বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পথে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত এ বিষয়ে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে সভার নোটিশ জারি হয়েছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এনটিআরসিএর হাতে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া গেলে দুর্নীতি, মামলা, হানাহানি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অবসান ঘটবে।
২০১৫ সাল থেকেই এই দাবি জোরালো হলেও প্রভাবশালী মহলের আপত্তিতে প্রক্রিয়াটি থেমে ছিল। সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুর রহমানও অতীতে মত দিয়েছিলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগে আপাতত এনটিআরসিএর সুপারিশ কার্যক্রম শুরু করা সমীচীন নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন মহল নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ২১ জুলাই ২০২৫ তারিখে এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব পাঠায়। এর আগেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম প্রস্তাব করেছিলেন— অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান, সহপ্রধান, সুপারিনটেনডেন্ট ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন ও সুপারিশ কার্যক্রম চালু করার। এর জন্য আইন সংশোধন, নতুন ধারা সংযোজন এবং অর্ডিন্যান্স জারি করার সুপারিশও করা হয়েছিল।
এক জরিপে দেখা গেছে, ৯৮ শতাংশ মানুষ চান প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া এনটিআরসিএর হাতে হোক। তবে এতদিন ক্ষমতাসীন দলের কিছু সাংসদ, পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালী মহল এবং এনটিআরসিএর সাবেক কয়েকজন চেয়ারম্যান এই প্রক্রিয়ায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। তাদের যুক্তি ছিল— এনটিআরসিএর ওপর কাজের চাপ বেড়ে যাবে। কিন্তু শিক্ষা মহলের মতে, প্রকৃতপক্ষে নিয়োগ বাণিজ্যের অবাধ সুযোগ হারানোর আশঙ্কাই এর প্রধান কারণ।
আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের সভায় প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহপ্রধান নিয়োগে এনটিআরসিএর হাতে দায়িত্ব হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে দুর্নীতি দমনে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন, আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ এবং প্রার্থী বাছাইয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নতুন পরীক্ষা ও সুপারিশ পদ্ধতি চালুর সম্ভাবনাও রয়েছে।